সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

অনন্ত

*

শুরু 

কি করব কিছু বুজতে পারছি না।

অনেক দিন ধরেই চিন্তা ভাবনা করছি কিছু করব করব কিন্তু কিছু করা হচ্ছে না। এইদিকে এক মাস ধরে বসে আছি নতুন কিছু করব করব ভেবে। এইসব ভাবতে ভাবতে শামিমের ফোন এলো।

কিরে যাবি নাকি ?

কোথায় যাওয়ার প্লান?

চলে আয় টংয়ের দোকানে ।

তাও ভাই ভালো । টাকা পয়সার এখন যা টানা টানি অবস্থা । বাসায় ও টাকা চাইতে লজ্জা করে । খুবই এক ভয়ানক অবস্থা।"

তুই না কি প্রজেক্ট হতে নিবি বলছিলি। ঐটার কি হল।

আরে বললেই কি সব হয় নাকি ? এইসব করতে ফান্ডিং এর প্রয়োজন হয় ।

আচ্ছা আচ্ছা তুই টং এর দোকানে আয় তারপর কথা হবে।

আচ্ছা ঠিক আছে আসছি তুই ও আয়।

সন্ধ্যার সময় বাহিরে ভালোই ঠান্ডা পরেছে । হুডিটা পরে বেরিয়ে গেলাম । রাস্তায় অনেক বাতাস বইছে । টং এর দোকানে শামীমের কোন কোন খোঁজ পাওয়া গেল না কিন্তু এতক্ষণ এ ওর চলে আসার কথা ছিল। এই দিকে শালা ফোনটা ও রিসিভ করছে না । ও কি আমার সাথে মজা করছে নাকি?  আমি পকেটে চা-বিড়ি খাওয়ার টাকাই নিয়ে এসেছি। ২ টা সিগারেট কিনে বাড়ি ফিরে যাওয়াই উত্তম কালকে ওর সাথে হিসেব বরাবর করব। টং এর দোকানের একটু সামনে যেতেই একটা বাশ-বাগান পরে। এর পাশে দিয়ে যাওয়ার সময় মনে হলো পা কাদা মাখা হয়ে গেছে । কিন্তু আসার সময় তো এখানে কোন কাদা ছিল না । ব্যপারটা আমার কাছে অদ্ভুত লাগলো। বিড়িতে টান দিয়ে ফ্লাস অন করে যা দেখলাম সেইটা আমার মাথাই ঘুরিয়ে দিলো । একটা লাশ! আর আমি যেই কাদার উপরে দারিয়ে ছিলাম সেটা কাদা ছিলনা , ছিল ঐ লাশটার রক্ত।  এই দৃশ্য দেখার পর যে কোন সুস্থ মানুষের অবস্থা খারাপ হওয়ার কথা । আমার ক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম হলো না । এই অবস্থায় আমি কি করবো তা বুঝে উঠতে পারছিলাম না । পকেটের কোনে থাকা মাল্ব্রো টা ধরালাম লাশের পাশেই । হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে । একবার সিফাত বলেছিল ভয় লাগলে নাকি সিগারেট ধরালে ভয় কমে যায় সেইটার ই পরিক্ষা করছিলাম। সিগেরেট শেষ করে বাসায় ফিরলাম । কিন্তু লাশটার কথা ভাবতেই মাথা থেকে ঘুম উরে গেলো। বাসায় ফিরে কেন যেন ফাকা ফাকা লাগছিল। অন্য দিনের মত আজকে বাবা তেমন বকাবকি করে নি। ভাবতেই ব্যপারটা অবাক লাগে । এমন খুব কম দিন ই আমি কাটিয়েছি যে আমার বাবা বকাবকি করেন নি । আর লাশটা আসলে কার ? সেইটাই মাথায় ডুকছে না । এইদিকে কেন যেন মনে হচ্ছে পুলিশ আমার পিছনেই পরতে পারে । কারন লাশের পাশে যে রক্ত ছিল সেটার মধ্যে আমার জুতার ছাপ আছে । তাতে কি যায় আসে আমিতো জুতাই বাসার পাশের জমে থাকা কাগজ গুলোর সাথে পুড়িয়ে ফেলেছি। আর যে সিগেরেটের ফিল্টারটা ফেলেছিলাম সেটা থেকে আবার আমার ডিএনএ পাওয়া গেলে । এখন এমন একটা অবস্থা হয়েছে যেখানে আমি কিছু না করেও অপরাধীর মতো চিন্তা ভাবনা করতে হচ্ছে । এখন একটু চিল করতে হবে আর মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হবে । শালা সব ঝামেলা হয়েছে এই শামীমের জন্য ও যদি কল না দিতো তাহলে আমাকে আর ঝামেলায় পড়তে হতো না । এখন কি একটা মুসিবত এ আছি আর ঐদিকে হয়ত ও নাক ডেকে ঘুম দিচ্ছে।

এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গিয়েছি তার ঠিক নেই ।সকাল বেলা উঠে কাউকে বাসায় দেখলাম না ।সবাই কোথায় গেলো । আজ উপার্জন করতে পারি না বলে কেউ খোজ নিতেও আসে না । বাবা- মা এমনকি ছোট বোনকেও বাসায় দেখতে পেলাম না । নিজের জন্য নিজেই মনে হয় চা বানাতে হবে । ইনকাম করলে কত মজায় না থাকা যেত । টিভি অন করতেই দেখলাম আমাদের এলাকায় থাকা বাশ বাগানের নিচে একটা লাশ পাওয়া গিয়েছে, আমি তো ব্যাপারটা ভুলেই গিয়েছিলাম । লাশটা নাকি শনাক্ত ও করেছে পরিবার । আর যেটা দেখতেই আমার দেহ রক্তশূন্য হয়ে গেল সেটা হলো আমার নাম ও ছবি । লাশটা নাকি আমার । আর যদি তাই হয় তাহলে আমি কে ?  মরে গেলে কি মানুষ মানুষের মতো দুনিয়াতেই থাকে নাকি? আমাকে মারলো কে আর আমি মরলাম কোন সময় ।

 

 

অন্য ইউনিভার্সের কায়েসের ঘটনা

-এইটা আমি অনেক কষ্ট করে আবিস্কার করেছি । আমি কিছুতেই আমার রিসার্চ তোর নামে করে দিতে পারি না । এইটার জন্য আমি কত কিছু সহ্য করেছি তুই ভালো করেই জানিস ।

-এর বদলে তুই মোটা অংকের টাকা পাবি আমার নামে করে দিলে সমস্যা কোথায় তোর? আর তুই কি মনে করিস আমাকে না করে দিলে আর কেউ তোর পিছনে পরে থাকবে না ? অবশ্যই থাকবে । আমি তোকে এত টাকা দিবো যে তুই সারাজীবন আরামসে চলতে পারবি ।

-এর পিছনে আমি অনেক সময় দিয়েছি । আর তুই বলছিস আমি তোকে দিয়ে দিবো  । এইটা হতেই পারে না । আমার এত বছর এর সাধনা ।

-আমি কি তোকে এতগুলো টাকা ফ্রীতে দিচ্ছি নাকি? এইটা হচ্ছে তোর সময় এর মুল্য । যা দিয়ে বাকি জিবনটা চলে যাবে ।

-আমার কাজের মুল্য তুই টাকা দিয়ে হিসেব করবি নাকি?

-তা ঠিক আছে কিন্তু একটা মানুষের জীবন ভালো মত চালানোর জন্য যত টাকা প্রয়োজন তত টাকাই আমি তোকে দেব ।

-কিন্তু আমি এতে রাজী না ।

কথাটা বলার সাথে সাথে শামীম তার হাতের পেছনে লুকিয়ে রাখা ছুড়িটা কায়েসের পেটে ডুকিয়ে দিলো। শালা এত টাকা দিচ্ছিলাম ভালো লাগছিলো না । তুই যা আবিস্কার করেছিস তার মধ্যেই তোকে ফেলে দিয়ে আসব। তখন বুজবি কেমন লাগে । এইবার দেখ এই পোর্টাল এর আমি কেমন ব্যাবহার করি । দুনিয়ার সবাই আমার নাম মুখে মুখে নিবে । কারন মাল্টীভারস থিউরি যে সত্য এইটার সব ডকুমেন্ট এখন আমার কাছে হাহাহা ,হাসিতে যেন পুরো দালানটা কাপছে । 

লাশ টার এখন একটা ব্যবস্থা করতে হবে।প্রমাণ এইখানে রাখা যাবে না । ওর আবিষ্কার মাল্টিভার্স এই ফেলে আসব ওকে কিন্তু লেভেল ওয়ান ইউনিভার্স এর পোর্টাল খুলতে হলে একটা পোর্টাল কি এর প্রয়োজন হবে । হাহাহা আমি চিন্তা করছি কেন । এইখানের মৃত কায়েস তো অন্য ইউনিভার্স এ জীবিত ওকেই পোর্টাল কি বানিয়ে লাশটা অন্য পৃথিবীতে ফেলে আসি এই লাশ জিবনেও কেউ খুজে পাবে না আর আমার নাম ও উঠে আসবে না।  

শামীম ১ম লেভেল এর মাল্টইভারস এর পোর্টাল খুলে তার বাসার পাশের বাশ-বাগান আবিষ্কার করলো । এত ঝামেলার কি আছে লাশটা এইখানেই ফেলে যাই । কাজ শেষ । কায়েসের লাশের দিকে তাকিয়ে শামীম ,

” তুই মরে গিয়ে আমাকে অমর করে দিলি বন্ধু । উপরে ভালো থাকিস। সরি তোর জানাজা ও হলো না । আমার কথা শুনলে এমন হতো না রে । যাই হোক বিদায় ।“

 

 

এইদিকে বাসায় এসে কায়েসের বাবা তো তাজ্জব ।

 কিরে বাবা তুই বেচে আছিস ?

মা এসে আমাকে জরিয়ে ধরলো আর চোখের পানি যেন টপ টপ করে পড়ছিল।

হ্যা । তোমার তো আমার দিকে বিন্দু মাত্র খেয়াল থাকে না । আচ্ছা বলো তো কার লাশ ছিল আমার মতো ?

সেইটাই তো জানি না একেবারে তোর মতো দেখতে । পুলিশ লাশ নিয়ে আসছে বাসায় । জানাজা দিতে হবে তো ।

কিন্তু আমি এইখানে থাকলে ও কে ?

কথা বলতে বলতে এক পুলিশ কর্মকর্তা এসে জিজ্ঞেস করলো

এটা কি ওনার জমজ ভাই?

না , মানে আমি বুজতে পারছি না আমার ছেলের মতো দেখতে ও কিভাবে হলো ।

ওরা জমজ না ? আমি শুনেছিলাম একই চেহারার সাত জন মানুষ নাকি থাকে । আজকে এই কেস ও আমার কপালে এসে জুটে যাবে তা কখোনো কল্পনাও করতে পারি নি।

দেখুন স্যার আমিও বুজতে পারছি না ।

আচ্ছা আমি খোজ  নিচ্ছি আপাদত লাশটা আবার মর্গে নিয়ে যাচ্ছি । আমাকেও ইনভেস্টীগেশোন চালাতে হবে আপনারা সত্যি বলছেন নাকি । আর মনে হয় আবার একটা ময়না তদন্ত করতে হবে ।

ব্যাপারটা আমার কাছেও কেমন জেনো আজগুবি লাগছে ।আর অসম্ভব কোনো ব্যপার ও নয় । এমন ও হতে পারে আমার চেহারা নিয়ে কোনো শালা আইনের হাত থেকে বাচতে চাইছিল । শালা সব খালি আমার ঘারে এসেই জুটে ।

সব ঝামেলার পরে শামীমের ফোন,

কাদো কাদো গলায় আন্টি কায়েসের নিউজটা মাত্র দেখলাম । কিভাবে কি হয়ে গেল ।

আরে শালা বাইচা আছি । আগে বল কালকে কই গেছিলি?

ভাই আমি যা তোরে বলমু এইটা তুই বিশ্বাস করবি না ।

আরে বল ।তোর জন্যইত সব ঝামেলা শুরু হইল।

আমি তোরে কল দিয়া বের হইছি দেখি সব রাস্তা সেইম কিন্তু টং এর দোকান পাই না । এক রিকশা আলা কাকারে জিগাইলাম দোকানের ব্যাপারে হ্যায় কয় এইনে কনো দোকান ই ছিল না । সব উলটা পালাটা লাগতাছিল ।

পরে কি হইল?

পরে বাসায় আইসা তোরে কল দিমু । দেখি এক মেয়ে দরছে ভাবলাম তোর বোন। পরে কয় রঙ নাম্বার । কসম দোস্ত নাম্বার ঠিক ছিল । খাইয়া দিলাম ঘুম । এইমাত্র তোর নিউজ পাইলাম আর আন্টিরে কল দিলাম।

আচ্ছা বাসায় আসিস কিছু কথা আছে ।

আচ্ছা গোসল কইরা আসতাছি ।

হুম আর বাশবাগানের রাস্তা দিয়ে আসিস না ।

আচ্ছা ।

দুপুরে শামীম বাসায় এলো ।

ঐদিন তুই ফোন করে বলছিলি না যে আমার প্রজেক্টের কি অবস্থা ?

হ্যা

আমি এমন একটা গাজাখুরে জিনিস নিয়ে কাজ করছি যেইটা ৯৯% মানুষই বুজবে না । তাই আর কাউকে জানানোর প্রয়োজন মনে করি নি ।

তো এখন কি মনে করে আমাকে বলছিস ?

ব্যাপারটা এমন হয়েছে, মনে হচ্ছে এইসব আমার সাথেই ঘটছে ।

কি ঘটছে ?

তুই চুপ থাক। আমি বুজাচ্ছি ।আর আমার কথার মাঝে আটকাবি না ।

আচ্ছা।

শোন আমরা যেই ইউনিভার্স এ বাস করছি এই রকম একটা না হাজার হাজার ইউনিভার্স আছে ।

হ্যা, এইটা আমি জানি।

কিন্তু আমাদের পৃথিবীর মতো আরো হাজার হাজার পৃথিবী আছে আর আমার তো মতো হাজার হাজার আমি তুই আছি।

কি বলছিস এইসব।

চুপ থাক আর আমার কথা শোন। যেহেতু আমাদের ইউনিভার্স এর মতো অনেক ইউনিভার্স আছে তাই ধারনা করা হয় আমাদের মতো জমজ সমান্তরাল ইউনিভার্স আছে । আর একে লেভেল ১ প্যরালাল ইউনিভার্স বলে।এ তত্ত্ব অনুযায়ী মহাবিশ্ব স্থানটি এত বড় যে অবশ্যই সম্ভাবনার নিয়ম অনুযায়ী , কোনো না কোনো স্থানে ঠিক পৃথিবীর মতোই অন্য গ্রহ আছে । প্রকৃতপক্ষে, একটি অসীম মহাবিশ্বের অসংখ্য গ্রহের অস্তিত্ব রয়েছে এবং তাদের মধ্যে কিছুতে , যা ঘটবে সেগুলি আমাদের পৃথিবীর মতোই হবে বা পৃথিবীতেও তার অনুরূপ ঘটনা ঘটবে। আমরা এই অন্যান্য মহাবিশ্বগুলি দেখতে পাই না কারণ আমাদের মহাজাগতিক দৃষ্টি আলোর গতি দ্বারা সীমিত – যা চূড়ান্ত গতির সীমা। আলো প্রায় 14 বিলিয়ন বছর আগে বিগ ব্যাংয়ের মুহূর্ত থেকে ভ্রমণ শুরু করে এবং তাই আমরা 14 বিলিয়ন আলোকবর্ষের চেয়ে বেশি কিছু দেখতে পাচ্ছি না। মহাকাশের এই ভলিউমকে বা আকারকে হাবল ভলিউম বলা হয় এবং এটি হলো আমাদের পর্যবেক্ষণযোগ্য মহাবিশ্ব। লেভেল ১ প্যারালাল ইউনিভার্স থাকলেও , এতে পৌঁছানো অসম্ভব। কারণ সংজ্ঞা অনুসারে, লেভেল ১ প্যারালাল ইউনিভার্স এতদূরে যে কোনও বার্তা তাদের কাছ থেকে আমাদের কাছে বা আমাদের কাছ থেকে তাদের কাছে আসতে পারে না।

বুজতে পারছি ভাই । এত জ্ঞানের প্যাচাল না পাইরা লাইন এ আয়।

আমার কেন জেন মনে হচ্ছে আমাদের ঘটনা গুলা প্যারালাল ইউনিভার্স রিলেটেড।তোর এইভাবে অন্য এলাকায় যাওয়া আমার মতো দেখতে একজনের লাশ পাওয়া যাওয়া ।

তুই যদি অন্য ইউনিভার্সে মারা যাস তাহলে এইখানে বেচে থাকতে পারবি?

হ্যা অবশ্যই। এইগুলা আলাদা আলাদা নিয়ন্ত্রন হয় । এইখানের আমি বেকার হতে পারি কিন্তু অন্য ইউনিভার্স এর আমি এই আমি থাকবো না এইগুলা আলাদ আলাদা নিয়ন্ত্রন হয় । কেউ কারো উপর কেউ প্রভাব ফেলে না ।

আচ্ছা বুজতে পেরেছি।

তো এখন কি করবি?

আমি জানি কিভাবে পোর্টাল আনলক করে কিন্তু এইটার জন্য বড় ল্যাব এর প্রয়োজন।

তুই কি আমাকে দিয়ে ল্যাব কিনাবি নাকি? আমি সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এত টাকা নাই যে তোকে ল্যাব গিফট করব।

আরে তা না তোকে বললাম আরকি ।

দুইজনের কথার মাঝে একটা কল এল।

হ্যালো। আসসালামুয়ালাইকুম কে বলছেন?

ওয়ালাইকুম সালাম । আমি শামীম বলছি।

কোন শামীম ?

তোমার বন্ধু।

মজা করছেন । ওতো আমার সামনে । আপনি কে?

শামীম । কেন কন্ঠ চেনা চেনা লাগছে না?

হ্যা ঠাণ্ডা গলায় আমি ।এইদিকে শামীম আমার দিকে তাকিয়ে ,"কে কল দিছে?"

শুনো তুমি টং এর পিছনে একটা গলি আছে ওইটার শেষ এ ৪ টায় দেখা করো । তোমার সাথে বসা আমিকেও নিয়ে এসো।যা বলার ওইখানেই বলব।

আচ্ছা ।

কল কেটে গেল ।

কিরে কে কল দিয়েছিল রে?

আমি যা ভাবছিলাম তাই হয়েছে রে । চল মা রান্না করেছে খাওয়া দাওয়া সারি বিকেলে বের হতে হবে ।

কোথায় যাবো ?

সারপ্রাইজ।

 

খাওয়া দাওয়া শেষ করে বেরিয়ে গেলাম । টাং এর দোকানের পাশে যে গলিটা এত শুনশান থাকে তা আগে জানতাম না । একেবারে শেষ দিকে গিয়ে দেখি একটা ছোট রুম । পাশেই পরে আছে পুরানো ক্রাম বোর্ড। হথাত এক আওয়াজ এলো পেছন থেকে,

একটু তারাতারি এসে পড়লে না তোমরা?

শামীম নিজেকে দেখে তো চোখ ছানাবড়া অবস্থা । কি ?? আমার মতো দেখতে এ কে ?

শান্ত হয়ে বসো । আমি আর তুমি একই । আমি অন্য ইউনিভার্স থেকে এসেছি । আর আর দুপুরে কায়েস কে আমিই ফোন দিয়ে দেখা করতে বলেছিলাম ।

হ্যা এইবার ঘটনা খুলে বলুন ।

#শোন তোমার মতো একজন ছিল । যার লাশ এই খানের জঙ্গলে পাওয়া গেছে । সে আমাদের মাল্টিভারস এর যোগসুত্র । ও প্রথম পোর্টাল আবিস্কার করে কিন্তু অর বন্ধু শামীম তাকে মেরে ফেলে সব রিসার্চ নিজের নামে করে নেয় ।শেষে লাশ লুকানোর জন্য পোর্টাল আনলক করে এই ইউনিভার্স এ ফেলে দিয়ে যায়। এখন ও যা করছে তা মারাত্মক সমস্যা । ও ভেবেছিল পোর্টাল কি ওর বন্ধু কায়েস কিন্তু পোর্টাল কি ও নিজেই ছিল। তার ফলে আমাদের টুইন ইউনিভার্সের শামীমদের অনেক সমস্যা হয়েছে । গতকাল তোমার বন্ধু শামীম আমার ইউনিভার্সে চলে এসেছিল।

আচ্ছা এই কাহিনী হয়েছিল আমার সাথে । তাই তো টং এর দোকান পাই নাই।

এখন আমি কি করতে পারি ?

শোনো তুমিও সেইম প্রযেক্ট এর উপর কাজ করছো । আমি তোমাকে সব ব্যাবস্থা করে দিবো । তুমি পোর্টাল ক্লোজ করো । নাহলে খুব বিপদ হতে পারে ।

যেমন ।

যেমন, আমি কাল খোজ লাগিয়ে জানতে পেরেছি ঐ ইউনিভার্সের শামীম আন্ডার ওয়ার্ল্ড এর হয়ে কাজ করছে । ওর কাজ হবে সব লাশ অন্য ইউনিভার্সে ডাম্প করা । এতে ওদের পুলিশ মৃত দেহ সম্পকে কোন তথ্যই পাবে না ।

কি ভয়ানক ব্যাপার । আর দেখেন আমার সাথে যে শামীম বসে আছে সে পুরাই বোকাচদা।

যাইহোক তুমি সব রেডী করো । আমি তোমার সাথে যোগাযোগ করছি।

আচ্ছা ।

 

রাতে আবার পুলিশের সেই কর্মকর্তা এসে হাজির ।

শুনেন ভাই । আপনার ছেলের মতো আরো একটা কেস পাওয়া গেছে । কবির বলে এক ভদ্রলোক। বিকালে তার লাশ পাওয়া গেল । বাসায় খব দিতেই দেখি তার মতো একজন ঐ বাসায়  জীবিত আছে । মজার ব্যাপার হলো তার ও টুইন কেউ নেই । তাহলে লাশ কার এইটাই খটকা লাগছে।

জী আমিও আমার ছেলের ব্যাপার নিয়ে চিন্তিত।

আরে টেনশন নিয়েন না । চিন্তায়  অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন্তাই আপনাকে ইনফো টা দিয়ে গেলাম। আর আপনার ছেলেকে সাবধান এ রাখেন ভাই। তাহলে উঠি।

আচ্ছা ।

এইদিকে আমি এখন বুজে গিয়েছি ব্যপারটা কি । ঐ হারামী শামীম এই আকাম করছে । লাশ ডাম্পিং।

রাত ১২ টার দিকে এক কল আসলো । রিসিভ করতেই বুঝে গেলাম কে ।

শামীমকে নিয়ে রওনা হলাম সেই পুরানো গলির শেষ এ । দেখি অনেক বড় একটা মেশিন ।

শোন এইখানে আমার সাথে অন্য শামীমদের সমস্যা হচ্ছে তাহলে পোর্ট কি কে হতে পারে ?

জী যতটুক জানি আপনি।

তাহলে বন্ধ করবে কিভাবে ?  

যেহেতু আমি বন্ধ করে ঐপাশ থেকে খুলে ফেলবে তাই একটাই উপায় । ওই শামীমের থেকে অই পেপার নিয়ে ধংস করতে হবে ।

তাহলে আমাকে পোর্ট বানিয়ে পোর্টাল ওপেন কর । আমআদে ডান আর বামের দুটি ইউনিভার্স আছে।

জী আমি খাতায় কলমে পারি । এইভাবে ট্রাই করি নি।

আরে ব্যাটা কর তো । আমিও এমনেই আসছি । আমাদের অইদিকেও গবেষনা চলে । কিন্তু সমস্যা আমাদের ঐ ইউনিভার্স এর ডায়মেনশন অজানা।

তাহলে আপনি যে ওদের ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছিলেন সেইটা কিভাবে?

আরে আমি ভুল করে আজকে ঐ টায় চলে গিয়েছিলাম । ভেবেছি চলেই যেমন এসেছি একটু খোঁজ নেয়া যাক। আর তুমি পোর্ট করলে ২ টা ইউনিভার্স পাবা । ডান আর বাম । তোমাদের টা মাঝে থাকবে।

আচ্ছা আপনাকে পোর্ট করলে ডান দিকের সমান্তরাল ইউনিভার্স এ আমরা আগে পা দিব ওকে ।

হ্যা ।

আচ্ছা । শুরু করা যাক ।

এক আলোর ঝলকানী দিল । কেন জেন আমাদের খুব হালকা মনে হচ্ছিল।

কি হলো কিছুই বুজে ঊঠতে পারলাম না । 

দেখলাম আমরা সেই পুরনো গলির পাশেই চলে এসেছি কিন্তু আবহাওয়াটা ভিন্ন। হঠাৎ একজন শামীমের উদ্দেশ্য,

বস এই লাশটা পাঠায় দেন নরকে ।

শামীমের শরির ঠাণ্ডা হয়ে গেল । তার মুখে মুচকি হাসি । আমি বুজতে পেরেছি কেন সে হাসছে।

হ্যা, তুই যা আমি পাঠিয়ে দিচ্ছি।

আমাকে উদ্দেশ্য করে । আমরা ঠিক জায়গায় এসেছি। একটু পর বোকা শামীম এই এলাকায় ল্যান্ড করলো ।

আরে বস ডেড বডি নাকি?এই আমি তো দেখি পুরাই ডন।

আমি বুদ্ধি করে সব শামীমের হাতে কালো কালির - ,+ দিয়ে দিলাম যেন বুজতে সমস্যা না হয় কে ওটা । বোকার হাতে + আর , যে হেল্প করতে যে এসেছে ঐ শামীমের হাতে – চিহ্ন।

চল অই শামীমের বাসায় যাই। আমার জানাই আছে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল কোথায় রাখি।

হুম চল।

রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম মনে হচ্ছিল যেন নিজের মাটিতেই হাঁটছি । সবকিছু হুবহু একরকম।সামনেই শামীমের বাসা 

চল ডুকাযাক ওর বাসায়।

চল সবাই।

আমরা গিয়ে শামীমের বাসায়  উপস্থিত হতেই । ড্রয়িং রুমের লাইট জলে উঠলো ।

হাহাহা কিরে প্যারালাল শামীমেরা । তোরা দুইটাই বোকাচদা তোরা আমার এলাকায় আসবি আর আমি জানবো না ।

এই কথা শূনতেই + শামীম দৌড় । দিলো ।

দেখ তোদের কেমনে মারি ।

১ মিনিট পর এক মটু বোকা শামীম কে ধরে নিয়ে আসলো ।শামীম ছটফট করতে লাগলো । ও ছোট কাল থেকে এমন ই। খালি ছটফট।

কায়েস কে একবার মেরেছি আবার মারবো । এক মানুষ কে দুবার মারার সৌভাগ্য কয়জন এর ই বা হয়।

এইদিকে – শামীম আমার দিকে ইশারা করছিল । আমি বুঝে গেছি আগে জীবন বাচানো ফরজ। শামীম ইঙ্গিত দেয়ার সাথে সাথেই আমি কাজটা করলাম । তার পর এক আলোর ঝলকানি চলে এলাম আমাদের টং এর দোকানের সামনে ।  

কিরে আমরা না ওই শামীমের বাসায় ছিলাম । এইখানে কিভাবে?

হাহা এইটাই প্ল্যান ছিল। তুই আসার আগের ঘটনা। ওই লাশটা অন্য জায়গায় পাঠানোর জন্য একটা ছোট ডিভাইস দিয়েছিল ।এইটা পোর্টাল। তাই বিপদে পরলে নিজেদের জন্য ব্যাবহার করতে আমি রেখে দিতে বলেছিল এই শামীম ভাই

হ্যা, কিন্তু  তীরে এসে তরী ডুবে গেল।

এক্সকিউজমি, হাতে সাদা মোটা কাগজ আর ডায়েরী বোকার হাতে ।

দেখ আমি তো যানি আমার লকারের পাসওয়ার্ড । অইটায় ঈ আমি সব ফেল করা খাতা লুকাইতাম, ওই শালা এইখানেই এডি রাখছিল।

এই শামীমের মুখে সেই মুচকি হাসি । মেশীনটাও আমার হাতে । যাক এই যাত্রায় বেচে গেলাম। এখন তো আমার যেতে হয়।

আরে আমার টুইন যাবি যেমন মামার হাতের চা খাইয়া যা । তোগো ওনে তো এই দোকন ই নাই ।

ঠিক ভায়া । কত বড় কাজ করলাম এক কাপ চা খাওইয়া ফরজ । তাও মাল্টিইউনিভারস এ ।

তিনজন মিলে তিন কাপ চা মাল্টি ইউনিভার্সে বসে খা...

 

 

 

                                                         সমাপ্ত

 


মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন