আমি কি চেয়েছিলাম যে নিবির একা থাকুক? কখনই না । আমি তাকে একটি সুন্দর জীবন উপহার দিতে চেয়েছিলাম । এখন দেখি সে তার সবকিছু ছেড়ে কোথায় যেন ঘাপটি মেরে বসে আছে ।
কাকা আপনি যা করেছেন সব তার ভালোর জন্যই করেছেন কিন্তু সে তো এইসব ভালো ভাবে নিচ্ছে না । তার কাছে ভালো মনে হচ্ছে অন্য কিছু ।
কেনো এই ব্যাপারে তোমাকে ও কিছু বলেছে?
তেমন কিছুই না । মাঝে ওর কাছ থেকে শুনতাম পুলিশের চাকরী টাই নাকি ওর মনে খুব ধরেছিল।
কি? ও চাকরী কেউ করে? ঘুষ এর ব্যাপার স্যপার আমার এসব মোটেও পছন্দ না । সরকারী চাকরী তো কি হয়েছে । এটা আমি কখনই মেনে নেব না।
রহিমের বাবাকে হাজার বুঝিয়েও কাজ হলো না । শেষে একরকম বিরক্ত হয়েই ওর বাসা থেকে বেরিয়ে গেলাম।
নিবিরআমার ছোট কালের বন্ধু । আমাদের এক সাথেই বড় হওয়া । ছোটবেলা থেকে বন্ধুর স্বপ্ন গোয়েন্দা হবে । বাসায় গেলেই দেখতাম Sherlock Homes এর গল্প নিয়ে বসে থাকত। আমি ভেবেছিলাম ছোট বয়সে মানুষের মাথায় কত রকমের ভুত মাথায় ঢুকে । বয়সের সাথে সাথে তা বেরিয়ে যায় । আমার বন্ধুর বেলায় তা ঘটেনি । কলেজে পড়তে দেখতাম পত্রিকায় খুনটুন এর রহস্য নিয়ে পরে থাকতো আর আমাদের এসে এগুলোর গল্প শোনাত । ভার্সিটি জীবন শেষ করেই কি মনে করে ডুকে গেল পুলিশে। সাব ইনেস্পক্টর পদে । বাসার সবাই তো থ , এ চাকরি কিছুতেই তাকে করতে দিতে রাজি নয় । পরশু ওর জয়েন করার কথা ছিল কিন্তু গতকাল থেকে সে গায়েব । বাসা থেকে নাকি ঝগড়া করে বেরিয়েছে আর বাড়ি ফেরেনি। এ নিয়ে বাসার সবাই খুব চিন্তায় ।
রহিমের বাসা থেকে বেরিয়ে একটা সিগারেট ধরালাম । ওমনি ফোনের স্ক্রিনে একটা মেসেজ ভেসে উঠলো
“You know who I am” এর মানে কিছু বুঝলাম না । একটি অচেনা নম্বর থেকে এটি এসেছে । কিছু না ভেবে সেটায় একটা ফিরতি মেসেজ পাঠালাম, “I don’t know you. Who are you?” কোনো রিপ্লাই পেলাম না । রাতে পুরোনো সব বন্ধুদের রহিমের খবর দিয়ে বাসায় ফিরলাম । দুই চোখের পাতা এক করতে পারছিলাম না কিছুতেই । একে আমার বন্ধুকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না এর উপরে একটা অচেনা নম্বর থেকে এইরকম একটা উদ্ভট মেসেজ। কানে আমার সেই সস্তা ইয়ারপিস টা গুজে দিয়ে কখন যে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম তা ঘুনাক্ষরেও টের পেলাম না ।
সকাল ১১ টা ,
এক পশলা রোদ এসে চোখে পড়লো । ঘুম ভেঙ্গে গেলো আমার । ব্যাচেলর জীবন, দরকার একটা চাকরী এই একটা জিনিসের পেছনে ঘুরছি কতদিন । অহনার তো কবেই বিয়ে হয়ে গেলো জুটলো না শুধু আমার এই সোনার হরিনটা । আর রহিমের বাবার কিনা ছেলের সরকারি চাকরিটা পছন্দ না আজব এই দুনিয়া । এইসব ভেবে কেনো যেন ঠোটের কোনে হাসি চলে আসলো। নাস্তার জন্য বের হবো ফেসবুকে দেখলাম আমাদের অর্থমন্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে ভোরে । মনে করা হচ্ছে হার্ট এটাক এ মারা গেছেন তিনি । তাতে আমার কি । পরিক্ষার পাতায় কিছু কমন পাওয়া যায় কি না সেই আশায় তথ্য টা মাথায় রাখলাম। আজকের মত কি কাজ করবো তা ভেবে পাচ্ছিলাম না । অগত্যা সিগারেট ধরিয়ে বাসার দিকে রওনা হলাম । সিগারেট শেষ করে ফিল্টারটা ফেলে দিব এমন সময় সেই অচেনা নম্বর হতে মেসেজটা আবার পেলাম , মেসেজটায় লেখা ,’’Are you ok?”
এবার আমার সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছিলো। অবশেষে নম্বরটা ব্লক করে দিলাম ।
নিবিড়ের বাবাকে এই মেসেজটার ব্যাপারে জানাবো কিনা তা নিয়ে কিছুটা ভাবছিলাম। পড়ে মনে হল কি দরকার এসব নিয়ে তাকে কষ্ট দেওয়া এমনও তো হতে পারে এটা আমার অন্য কোনো বন্ধুর মেসেজ। এমনভাবে মজা করতে অনেককে দেখেছি। ব্যাপারটাকে এত গুরুত্ব দেওয়া ঠিক হচ্ছে না এই ভেবে আর কাউকে জানানোর প্রয়োজন মনে করলাম না। সাত দিন চলে গেল ঠিকই পর্যন্ত কেউ খুঁজে পেল না। পুলিশের জিডি করা থেকে প্রয়োজনীয় সকল কাজই করা হলো পুলিশের এ ব্যাপারে কোন কিছু তার পরিবারকে জানাতে পারলো না। এদিকে নিবিড়ের মায়ের অবস্থা দিন দিনের পর দিন খারাপ হতে লাগলো। বেচারি তার একমাত্র ছেলের শোকে এমন কাতর হয়ে গিয়েছিল যে সে মুখ দিয়ে কথা পর্যন্ত বলতে পারছিল না। আর দিকে তার বাবা সব কিছুর জন্য নিজেকে দায়ী মনে করছিল সব মিলে পরিবারের উপর অনেক বড় ঝড় যাচ্ছিল।নিবিড়কে খোঁজার জন্য যতটুকু আমার দ্বারা করা সম্ভব তার সবটুকু আমি সর্বোচ্চ দিয়ে করেছি কিন্তু তাকে আর খুঁজে পেলাম না । কিছুদিন পর আমার বিজেস পরীক্ষা বন্ধুর চিন্তায় যেন পড়ালেখার মন বসছিল না নিজের ভিতরে যে কি চলছিল তা নিজেই ঠিক মতো ঠাওর করতে পারছিলাম না। এদিকে সামনে আমার বিজেএস এর পরিক্ষা । সবকিছু নিজের কাছে ভালো লাগছিল শুধু পড়ালেখা টা বাদে। ভালো লাগতো মেঘে ঢাকা আকাশ। ভালো লাগতো সবুজ গাছপালা ভালো লাগতো শীতল বাতাস। এমন চিন্তা ধারা মানুষের মধ্যে চলে আসে সে মানুষের দ্বারা আর যাই কিছু করা সম্ভব হোক কিনা জর্জ কিংবা উকিল হওয়া তার পক্ষে সম্ভব না আমিও সেই প্রকৃতির নিয়ম মেনে চললাম আমার দ্বারা কিছু সম্ভব হলো না । অবশ্যই এটা আমার মেনে নিতে কষ্ট হয়নি কারণ পড়ালেখা এমনভাবে করতেই পারিনি আর একমাত্র প্রিয় বন্ধুকে হারিয়ে কেমন জানি বন্ধুর মতোই হয়ে গিয়েছিলাম। তিন মাস পরে আমি ফলাফল হাতে পেলাম আমি জানতাম আমার দ্বারা এটা সম্ভব না। মিলে একরকম একা হয়ে গেলাম আমার সেই বন্ধুকে খুব অনুভব করতাম সে কি আদৌ বেঁচে আছে? আমার সব বিপদের সময় কোন বন্ধু পাশে না থাকলেও নিবি সবসময় আমার পাশে থাকতো এই মুহূর্তে তাকে আমার খুব প্রয়োজন। কিন্তু এটা মেনে নিতে হবে সে আমাদের মাঝে আর নেই কারণ যদি বেঁচে থাকত তাহলে আমাদের সামনে অন্তত আমার সামনে একবার হলেও আসতো। অভিমান করে এতদিন আলাদা থাকতে পারতো না তাকে আমি ভালোভাবেই চিনতাম সেরকম ছেলে নয়। পুলিশের সাথে নিয়মিতই আমার যোগাযোগ ছিল তাদের কাছে কিছু জানতে চাইলে তারা বলতো
মানুষকে খুঁজে পাওয়ার আশা দূরে রাখুন এখন আমাদের তদন্ত করতে হবে হাসপাতালে আর থানায় যেসব বেওয়ারিশ লাশ পাওয়া গেছে সেগুলোর উপর নতুন কোন লাশ আসলে আমরা তার গুটিয়ে দেখছি আপনার বন্ধুর সাথে যদি কোন মিল পাওয়া যায় আপনাদেরকে জানাবো।
নিবিড়ের পরিবার তো ধরেই নিয়েছে নিবিড় আর ফিরে আসবেনা।
দুই বছর পর
আরেকবার বিজিএস পরীক্ষার জন্য নিজেকে তৈরি করেছিলাম কিন্তু জানতাম আমার দ্বারা সম্ভব হবে না। সেটাই হয়েছে আমার দ্বারা এটা সম্ভব হয়নি। শেষে একাকিত্বের মধ্যে ধরলাম নেশা। কেন নেশা নয় কোকেনের নেশা। মস্তিষ্ক টা খুব করে চাইত যেন একটা ধাঁধার সমাধান করি। নিজেকে খুবই ফেলনা মনে হতো আমার কি আদৌ এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার কোন অধিকার আছে?
আমার কাছে যেন মনে হচ্ছিল বেঁচে থাকার জন্য এটা একটা দিন পার করে দিচ্ছি এভাবে কি মস্তিষ্কের খোদা মেটে মস্তিষ্কের খুতবা মেটানোর জন্য প্রয়োজন ধাঁধা। অনেক জটিল ধাধা। মনে পড়ে যায় মন বন্ধু নিবিড়ের কথা। আদার সমাধান হতে যে গোয়েন্দা হতে হয়। সবটাই যেন আমাকে তে বসলো। ছোটখাটো কেস নিয়ে ঘাটাঘাটি শুরু করলাম। থানার ওসির সাথে সম্পর্কটা ভালই ছিল। উনাকেও মাঝেমধ্যে সাহায্য করতাম উনার সাথে ক্রাইম স্পটে যেতাম।আমি ছয় মাস চলল নিজেকে কিছুর মধ্যে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করলাম। বাবা এ ব্যাপারে জানতে পেরেছিল।তিনি আমাকে অফার করলেন কোন উকিলের সহকারী হিসেবে নিজেকে নিযুক্ত করার কিন্তু এই ওকালতি ঢোকালতি আমার দ্বারা সম্ভব না।এটা আমি স্পষ্ট আমার বাবাকে জানিয়ে দিলাম আমার বাবা কখনো আমার মতের বিরুদ্ধে কোন কিছু করতে বলেননি এবারও তিনি না বললেন না। এ পৃথিবীতে আমার বাবা ছাড়া আর কেউ নেই তাই নিজের একমাত্র ছেলে ভবিষ্যৎ বিগড়ে যাবে সেটাও তিনি চাইছিলেন না কিন্তু আমার জেদের কাছে তিনি হার মানলেন আমি একা থাকা শুরু করে দিলাম অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে আমি একাই থাকতাম।
অফিসারের কৃপায় আমার নামটা কিছুটা ছড়াচ্ছিল মানুষদের মুখে যে ছোট ছোট কিসের সমাধান গুলো আমি আরো ওসি মিলে করেছিলাম এগুলো নিয়ে সে হয়তো তার বন্ধুদের মাঝে গল্প করেছিল। যাই হোক কিছুদিন পরে একটা মেইল পেলাম এক মক্কেল পেলাম আমার সাথে দেখা করতে চান। তোকে আমি বিকেলবেলা আসতে বললাম প্রফেশনালি শুরু করার জন্য এটা আমার প্রথম মোকটেল ছিল।
বিকেলে আরাম-কেদারায় গা এ লিয়ে দিয়ে একটা সিগারেট ধরালাম। সিগারেটটা শেষ হতেই ধরা যায় টোকা পড়ল। আওয়াজ শুনে বুঝলাম হাতের ধাঁচ তেমন শক্ত নয় এ থেকে বুঝা যায় বয়স হবে ৪০ থেকে ৫০ বছর। আমি ওনাকে আওয়াজ দিলাম
"দরজা খোলা আছে ভিতরে আসুন ।"
দেখলাম আন্দাজমতো 40 থেকে 50 বছর বয়সি একটা লোক স্যুট বুট পড়ে রুমে প্রবেশ করলেন।
জ্বি আপনি কি আর জলদি মিটিং শেষ করে আমার বাসায় আসলেন নাকি।
আশ্চর্য ব্যাপার আপনি কিভাবে জানলেন ?
আরে তেমন কিছু না ।
না দয়া করে বলুন এটা কিভাবে জানেন।
আমি সিরিঞ্জ এর মধ্যে কিছুটা অ্যালকোহল নিয়ে তার ভেতরের বাতাস গুলো সব বের করতে করতে উত্তর দিলাম আপনার বা হাতের মধ্যাঙ্গুলে নীল কলমের কিছুটা দাগ আছে এ থেকে বোঝা যায় আপনি বাঁ হাতি আর নীল কলম ব্যবহার করেন মানে আপনার কাজ কাগজপত্রে সাইন করা আর কর্পোরেট অফিসে নীল কালির প্রচলন বেশি দেখতে পাওয়া যায় কারণ স্বাক্ষরগুলো কপি বা জাল করা সম্ভব নয়। আপনি যদি কর্মচারী হতেন তাহলে অফিসে আগে বেরিয়ে বাসায় যদি জানতে পারতো যে আপনি গোয়েন্দার কাছে গিয়েছেন তাহলে একটা বিরাট ব্যাপার হয়ে যেত এটার লুকানোর জন্য আপনি বাহানা তৈরি করতেন এতে আপনার কপালে কিছুটা ছাপ ফুটে উঠতো বা আপনি চিন্তিত অবস্থায় থাকতেন আপনাকে দেখলাম আপনি খুব রিলাক্স মোডে প্রবেশ করলেন এ থেকে খুব সহজেই বোঝা যায় আপনি কোন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। আরেকটু গভীরভাবে খেয়াল করলে আপনার ইমেইলে লেখা শেষ কিছু অংশ বিনয় ধরনের না হয়ে আদেশের ধরন প্রকাশ করেছে এ থেকে ধারণা করেছিলাম আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অথবা কোন প্রতিষ্ঠানের বড় কর্মকর্তা প্রথমটা সঠিক না হলেও দ্বিতীয়টা কিন্তু সঠিক হয়েছে।
বাহ! মনে হয় আমি সঠিক লোকের কাছে এসেছি।
আমার মুখের কোণে মৃদু হাসি ফুটে উঠলো। এসব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তথ্যের মাধ্যমে মক্কেলকে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েই যে কাজটা শুরু করব সেটার পরিকল্পনা কাল রাত থেকেই করে রেখেছিলাম এতে আমার উপর বিশ্বাসটা বাড়বে।
হাসিটা বন্ধ করে আমি উত্তর দিলাম এসব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জিনিস সব আমাদের চোখের সামনেই থাকে আমাদের প্রয়োজন কোন তথ্যটা লাগবে আর কোনটা লাগবে না সে তথ্যগুলো সব একত্রে করলেই কাঙ্খিত ফলাফল হাতে পাওয়া সম্ভব। এবার বলুন আপনি তো এসব শোনার জন্য আমার কাছে আসেননি আপনার কোন কাজে আমি লাগতে পারি।
তানজিম সাহেব নাকি ব্যাপার গুলো সব গোপন রাখতে পারবেন? এটা খুবই সিরিয়াস ইস্যু। বাংলাদেশী গোয়েন্দা বলতে তেমন কিছু নেই তো আপনাকে পেয়ে আপনার কাছে আশা। ওসি হারুন এর কাছে আপনার ব্যাপারে খুব শুনেছিলাম তাই আর কি।
যে আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন। আপনার ঘটনাটা সুন্দর করে বলুন যতটুকু আপনার মনে আছে মনে রাখবেন কিছু বাদ দেবেন না সম্পূর্ণ ডিটেইলস দিয়ে বলবেন।
জ্বী আমার বড় ভাই ছিল না অর্থমন্ত্রী নজরুল ইসলাম।তিনি মারা গেলেন আগে।
হ্যাঁ একটু শুনেছিলাম খবরের কাগজে ।
তার ব্যাপারেই তদন্ত করতে আপনার কাছে আসা ।
ঢাকায় এত নামি পুলিশ অফিসার থাকতে আমার কাছে ? এর উপরে তিনি তো আর কোন মামুলি লোক নয় । ছিলেন আমাদের মন্ত্রী।
এটাই তো সমস্যা মন্ত্রী হওয়ার কারণে একটু চেষ্টা কেমন যেন চেপে গেল। আমার মনে হচ্ছে তাকে মারার পেছনে সরকারদলীয় লোকের হাত রয়েছে।
কিন্তু আমি যতটুক শুনেছিলাম তিনি হার্ট এটাকে মারা গেছে।
এসব তো দেশের জনগণকে শোনানো হয়েছিল।
আচ্ছা ঠিক আছে আপনি আপনার তথ্যই আমাকে বলুন।
আমার বড় ভাই নজরুল মারা যায় তার দুই দিন আগে তুমি একজন গোয়েন্দাকে নিজের কাছে ডেকেছিলেন। তাদের মধ্যে অনেকক্ষণই কিছু নিয়ে কথা হয়।
করবেন না আপনাদের মাঝখানে আটকে দিলাম কি নিয়ে কথা হলো সেগুলো কি জানেন।
জী বলছি।
আমাদের পরিবার থেকেই এ দেশের জমিদারিত্ব করতো। আমার দুই প্রজন্ম আগে যিনি জমিদার ছিলেন কুখ্যাত নাম ডাক ছিল । তিনি ছিলেন অত্যাচারি জমিদার ,প্রায় মানুষকে তুলে নিয়ে আসতেন। সে সময় তিনি এক হিন্দু পরিবারের উপর চরম নির্যাতন করেছিলেন। তারা ছিলেন ব্রাহ্মণ। তাই মারা যাওয়ার আগে তারা জমিদার পরিবারের উপর একটা অভিশাপ দেয় যে আমাদের মৃত্যু স্বাভাবিক ভাবে হবে না সেটা যেন আমরা মনে রাখি আর আমরা কখনো শান্তিতে থাকতে পারবো না এরকম কিছু আজেবাজে প্রলাপ বকে। যিনি জমিদার ছিলেন তার নাম ছিল কুদরত জোয়াদ্দার । তিনি সেই পরিবারের মুখে এসব প্রলাপ শুনে গ্রামের সবার সামনে তাদেরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেন সে আমলে তার বিশাল প্রতিপত্তি থাকায় ঘটনাটা প্রায় ধামাচাপা পড়ে গিয়েছিল তার একমাস পরেই কুদরত সাহেব মারা যান। আমার দাদা ছিলেন তার দ্বিতীয় ঘরের সন্তান। দাদার অভিশাপের কোন আজ পড়েনি বলে আমি জানি কিন্তু মনে হচ্ছে আমার ভাই এসব নিয়ে চিন্তা করতেন ।
এসব ব্যাপার নিয়ে তিনি কেন চিন্তা করবেন ?
সেটা আমি জানি না কিন্তু শেষ বয়সে তার ভালো ধরনের ভিন্নতি দেখা দিয়েছিল। আসলে সত্যি কথা হল আমাদের আমরা যখন গ্রামের বাড়ি যেতাম তখন আমাদের দাদা রূপকথার গল্প শুনাতেন। যেহেতু তার বাবা জমিদার ছিলেন অভিশাপের কথা তিনি জানতেন তাই তিনি আমাদের সকলকে নিষেধ করেছিলেন যেন রাত্রেবেলা জঙ্গলের দিকে যেন না যাই । তিনি আমাদের ভয় দেখানোর জন্য বিশেষ প্রাণের কথা বলতেন যেটা কুকুর নয় আমি জানতাম এগুলো মজার ছেল বলা। আর আমার দাদা কুসংস্কার বিশ্বাস করতেন তিনিও নিজেকে সেই প্রাসাদের মধ্যে বন্ধ রাখতেন মানুষের সাথে যোগাযোগ করতেন না কিন্তু যত কিছুই হোক তিনি ছিলেন তার বাবার উল্টা-প্রকৃতি খুবই দয়ালু।
আচ্ছা তাহলে নজরুল সাহেবের ব্যাপারটা।
ও তার মৃত্যুর কয়েকদিন আগে ই কেমন একটা প্রাণীকে বুক স্বপ্নে দেখেছিল। কাজে মন বসত না। অন্ধকার কি ভয় পেত তার সাথে দেহরক্ষীদের সব সময় তিনি তার কাছেই রাখবেন কখন না তার উপর কে হানা দেয় এসব কথা প্রায়ই আমাকে বলতেন। আমি ব্যাপারটা তেমন আমলে নেই যেহেতু তিনি একা থাকতেন তাই এইসব প্রলাপ বকা স্বাভাবিক ছিল।
নজরুল স্যারের কোন সন্তান ছিল না?
আজ্ঞে না।
তাহলে তিনি মারা যাওয়ায় তো আপনারই সুবিধা বেশি তার সম্পত্তিতে আপনারই তো সকল ভাগ চলে আসবে এর উপর তিনি ছিলেন মন্ত্রী।
ব্যাপারটা আপনি আমার দিকে কেন নিচ্ছেন আমি যদি তাকে খুন করতাম তাহলে আমি কি আপনার কাছে আসতাম। আমার টাকা পয়সার কমতি নেই আমি আমার ভাইকে ভালোবাসি তাই তার কেসটার একটা সুরাহা করার জন্য আপনার কাছে এসেছি ব্যাপারটা আমার দিকে নিবেন না আর আপনি অনুসন্ধান করে যদি বের করতে পারেন যে এর পিছনে আমি রয়েছি তাহলে আপনি আমাকে অবশ্যই জেরা করতে পারেন আমি আপনাকে সকল ভাবে সাহায্য করবো।
লোকটা একটানা কথাগুলো বলছিল কার চোখে মুখে কেন যেন একটা ভয়ের ছাপ দেখতে পেরেছিলাম। আমি সটান হয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলাম আপনার ভাইয়ের ভয়টাই কি আপনি পাচ্ছেন?
এই ঠান্ডায় লোকটার কপালে দেখলাম বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে গেল।
পকেট থেকে একটা রুমাল বের করে ঘামটা মুছে তিনি বললেন ব্যাপারটা বলেন না আমার মনে হচ্ছে এর পরবর্তী টার্গেট আমি।
কি বলছেন এই এ যুগে আপনি ভূতের ভয় করেন আর তিনি তো স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করেছিলেন হার্ট এ্যাটাক এ।
আপনাকে ভুল কি বলেছি এগুলো সব শোনানো হয়েছিল। তিনি যখন মৃত্যুবরণ করেছিলেন সেখানে আমি একটা কুকুরের পায়ের ছাপ দেখেছিলাম ব্যাপারটা আমি লুকিয়ে গিয়েছিলাম পুলিশের কাছ থেকে কারণ এটা জানাজানি হলে একটা বড় ইস্যু হবে এর উপর যেহেতু তিনি একজন মন্ত্রী ছিলেন তাই বিরতি নিয়ে একটা চাপও রয়েছে বুঝতে পারছেন।আরে কুকুরের পায়ের ছাপটা যদি ঢাকায় পেতাম তাহলে একটা কথা ছিল আমার পায়ের মৃত্যু হয়েছিল আমার গ্রামে ।
হঠাৎ আপনার ভাই কি কারনে গ্রামে গিয়েছিলেন।
সেটা তো আমি বলতে পারবো না এজন্যই তো আপনার কাছে আসে দয়া করে আপনি ব্যাপারটা সুরাহা করুন। আর আমার পক্ষ থেকে যা যা সাহায্য সহযোগিতা লাগবে তার সবটুকুই আপনাকে আমি দিতে রাজি আছি।
টেনশন করবেন না সুস্থ থাকুন আর এসব নিয়ে ভাববেন না ব্যাপারটা আমি দেখছি।
লোকটা উঠে চলে গেল আর কিছু বলল না। একটু পিছনে ফিরে বলল
আপনি আমার গ্রামের বাড়ি যেতে চান ? গেলে ব্যাপারটা মনে হয় আপনার জন্য আরো সহজ হবে। অবশ্যই কিন্তু তদন্ত করতে আপনাকেও প্রয়োজন তাই কিছুদিনের ছুটি নিয়ে চলুন আপনাদের সেই জমিদার বাড়িতে একবার ঘুরে আসি।
অবশ্যই আমার স্ত্রী কিছুদিন পরেই কানাডা চলে যাবে। পরশু মনে হয় টিকিট কেনা আছে তিনি গেলে তারপর দিনে আমরা জমিদার বাড়িতে যেতে পারি।
আচ্ছা ঠিক আছে দেখা হচ্ছে নিজের খেয়াল রাখবেন।এরপর লোকটির প্রস্থান ঘটল। শেষের দিকে লোকটাকে কেন যেন অন্যমনস্ক মনে হচ্ছিল কিছু নিয়ে যেন ভাবছিল। আমি এতটা অবাক হচ্ছিলাম না। কারন টা স্বাভাবিক আমি জানতাম তিনি মৃত্যুর ব্যাপারটা নিয়ে চিন্তিত। আমি অন্তত আর যাই করি এই গাঁজাখুরি গল্প বিশ্বাস করি না। যদি উনার বংশের উপর অভিশাপে আসতো তাহলে এর ভাগীদার তার বাবাও হতে পারতেন । এদিকে হারুন সাহেবের সাথে দুইটা কেস নিয়েও কথা বলার ছিল কেসের ফাইলগুলো হাতে নিলাম । সকল কাজ প্রায় শেষের দিকে। একটা ছিল গুলশানের মার্ডার কেস আরেকটা চুরি। সেদিন রাতে হাতে আর কোন কাজ ছিল না আমার নতুন নেশার দ্রব্য অ্যালকোহল শিরিঞ্জের মধ্যে নিয়ে হাতে পুশ করলাম এর মধ্যে যেন রয়েছে পৈচাশিক আনন্দ। রাতে আর খাবার খাওয়া হলো না এগারোটার দিকে আমার কাজের ছেলেটা এসে দুইবার ডেকে গিয়েছিল। ঘুমের মতো একটা আরামদায়ক জিনিস ত্যাগ করে খাবার খাওয়া । এটিকে খালি পেটে রাত্রি যাপন করা শ্রেয়। দুদিন পর ইফতেখার সাহেব আমার বাসায় আসলেন । তাদের জমিদার বড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য । এদিকে আমি আমার ছোটখাটো লাইব্রেরীতে বাংলার যত জমিদারদের ব্যাপারে যা কিছু লেখা আছে সবকিছু নিয়ে কিছুটা গবেষণায় বসে ছিলাম । কুদরত জোয়ারদার নামটা তেমন ভারী নয়। নেত্রকোনার দিকে তার বিশাল জমিদারিত্ব ছিল এটুকুই জানা গেছে। তার উপর অভিশাপের কোন কথা আমি খুঁজে পেলাম না আর না পাওয়াই স্বাভাবিক এগুলো গ্রামের মানুষদের মুখে মুখে ছড়ানো গল্প কথা। এটারই ফায়দা করে নিয়েছে । এদুই দিন পাউরুটি আর দুধ ছাড়া তেমন কিছুই খাওয়া হয়নি । রাতেও তিনটা চারটা বাজে ঘুমাতে যেতাম। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে বাসার নিচে একটা গাড়ি থামল। আওয়াজটা খুব ভালোভাবেই টের পেলাম। দরোজা কলিং বেল বাজলো বুঝতে দেরি হইল না সাহেব আমাকে তার বাড়িতে নিতে এসেছেন।
কি অবস্থা কেমন আছেন এত সকাল সকাল এলেন যে ?
কেন আপনার ঘুমে ডিস্টার্ব করে ফেললাম নাকি?
আরে না একটু বসুন আমাকে তৈরি হতে দিন। এখনই বেরিয়ে যাব।
রাস্তায় আবার পাউরুটি দুধ খেয়ে কুদরত সাহেবের সাথে বেরিয়ে পড়লাম। যেতে যেতে তিনি বললেন তাদের জমিদার বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় । প্রায় ঢাকার তিন ঘন্টার জ্যাম পেরিয়ে গ্রামের দিকে যখন প্রবেশ করলাম তখন যেন দেহে আবার প্রাণ ফিরে পেলাম । ভেবেছিলাম নেত্রকোনার দিকে প্রবেশ করে এলাকাটাকে খুব ভালোভাবে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখব কিন্তু সেটা হল না দুই ঘন্টা ঘুম হয়েছিল রাত্রে । তাই কখন যে গাড়িতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম তার টের পেলাম না এদিকে ইফতেখার সাহেব আমাকে ঘুম থেকে ডাকার কোন প্রয়োজন মনে করেননি । অবশেষে জমিদার বাড়িতে প্রবেশ করলাম। বাড়িটা গ্রামের শেষ দিকে । পাশে রয়েছি অনেক বড় একটা জঙ্গল। এরকম পরিবেশে যতই সাহসী মানুষ প্রবেশ করুক না কেন ভয় সে পেতে বাধ্য । বাড়িতে প্রবেশ করতেই তিনজন ভৃত্য আমাদের দিকে এগিয়ে আসলেন । আমাদের ব্যাগগুলো তারা ভিতরে নিয়ে গেলেন।
অনেকটা পথ জার্নি করে এসেছেন। আপনার বিশ্রামের প্রয়োজন । আপনার রুমটা দেখিয়ে দিচ্ছি যেখানে গিয়ে বিশ্রাম করুন ।
তার এ কথার তোয়াক্কা না করে প্রশ্ন করলাম, আপনার ভাইয়ের যে রুমটাই মৃত্যু হয়েছিল সেই রুমটা আমি একবার দেখতে চাই।
একি আপনি আসতে না আসতেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন । আচ্ছা এক কাজ করি আমার ভাইয়ের মৃত্যু যে রুমটাই হয়েছে সেই রুমটাই আপনার থাকার বন্দোবস্ত করে দিচ্ছি।
এটা হলো আরো ভালো হয় সবকিছু খুটিয়ে দেখতে পারবো। আর কুকুরের যে পায়ের ছাপটা সেটা কোথায় পেয়েছিলেন সেটা অবশ্যই আমাকে দেখাবেন ।
বাসায় আসার পরে কোন চাকরকে তার রুমে প্রবেশ করতে দেয়নি তাই অনেক ধুলাবালি জমে গিয়েছিল সেখানে কুকুরের ছাপটা পাওয়া যায়।
আপনি আবার ছাপটা পরিষ্কার করে ফেলেন নি তো?
পরিষ্কার যদি করে ফেলতাম তাহলে তো আর আপনার কাছে যেতাম না। ব্যাপারটা আমার কাছে সন্দেহজনক মনে হয়েছে তাই এখনো ওই পায়ের ছাপটা ওভাবেই রেখেছি।
কাজের কাজ করেছেন।
আচ্ছা আপনি আপনার কাজ করুন আমি বরং আমার রুমে যেয়ে বিশ্রাম নেই।
একটু পর বাড়ির একটি অল্প বয়সী কাজের লোক এসে আমার রুম দেখিয়ে দিল। রুমে প্রবেশ করে শুরুতেই বারান্দায় ঢুকে পড়লাম। দেখলাম একটা পায়ের ছাপ। সাধারণ কুকুরের মতই কিন্তু কেন যেন একটু বড় লাগছিল। গত দুইদিন আমি কুকুর সম্পর্কেও কিছুটা গবেষণা করেছিলাম। কুকুর যখন পা টিপে টিপে হাটে তখন এরকম ছাপ পড়ে । কিন্তু কুকুরের যদি হিংসাত্মক কিছু দেখানোর প্রয়োজনই মনে হয় তাহলে পা টিপে টিপে হাঁটবে কেন?
অনেক প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। এই কেসটা হাতে নিয়ে খুব ভালোই হলো। মস্তিষ্কটা সঠিক কাজে এবার খাটানো যাবে।
সকাল বেলা নাস্তার জন্য ডাক পরল। রাস্তার টেবিলে ইফতেখার সাহেব কে খুব চিন্তিত অবস্থায় দেখলাম।
আপনি এত চিন্তিত কেন আমি তো আছি আপনার সাথে। যতদিন না তদন্ত চলছে আপনি আমার সাথে থাকবেন। এত জলদি ঢাকায় চলে যাওয়া উচিত নয়। বাসায় আপনি একা থাকবেন এরকম চিন্তায় থাকলে দুর্ঘটনা হওয়া খুবই স্বাভাবিক।
এই কথাটাই আমি আপনাকে বলতে চেয়েছিলাম। আমার এখন বাড়িতে যেতে ভয় করছে। এর উপর এই পরিবেশটাও কেমন যেন ভয়ঙ্কর লাগছে আমার কাছে।
এটা স্বাভাবিক আপনাদের বাড়ির ধারে যে জঙ্গল রয়েছে এরকম একটা জঙ্গল যদি বাসার পাশে থাকি যে কোন স্বাভাবিক মানুষ সারাদিন আতঙ্কই থাকবে।
পাশ থেকে অমলেট টা সার্ভ করে কম বয়সে সেই ছেলেটা বলে উঠলো।
স্যার সেই দিন বড় বাবু মারা যাওয়ার পরে প্রায়ই একটা কুকুরের আওয়াজ শোনা যেত। বড় বাবু এটা সাথে আসার আগে থেকেই শব্দগুলো হচ্ছিল। আপনি বিশ্বাস না করলে গ্রামের মানুষদের জিজ্ঞেস করতে পারেন। সবাই এসব শব্দ শুনেছে । এই শব্দের কারণেই তো আমারদের বড় বাবু খুব চিন্তিত অবস্থায় থাকতো। তিনি মনে করতেন তার উপর কিছু একটা অভিশাপ রয়েছে। মানুষটা অনেক ভালো ছিলেন।
আচ্ছা তুমি যাও প্রয়োজন পড়লে তোমাকে আমি যা যা জিজ্ঞেস করবো তার সঠিক উত্তর দেবে।
নাস্তা করার পরেই ঘর থেকে বেরিয়ে পড়লাম। খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন । আর প্রতিবেশীগুলো নজরে নজরে রাখতে হবে। প্রাসাদ থেকে বেরিয়ে চার রাস্তার মোড়ে চায়ের দোকানে গিয়ে বসলাম। দুটো সিগারেট নিলাম। যে সিগারেটটা ধরাবো ওমনি একটা বয়স্ক লোক বয়স্ক বললে ভুল হবে ৪০ ৪৫ বছর বয়স মাথার অর্ধেক টুক টাক। আমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন
এ ছোকরা গ্রামে মনে হচ্ছে নতুন কোথা থেকে এসেছো?
জী আমি মন্ত্রী সাহেবের ছোট ভাইয়ের অফিসের কর্মচারী।
ও উনি আবার এসেছেন নাকি। বড় ভাইয়া তো অনেকদিন পর প্রাসাদে এসেছিলেন তারপরে তার মৃত্যু এখন আবার ছোট ভাইয়ের প্রাসাদে আগমন। দেখা যাক কি হয়। জানো তো ছোকরা ওনার কাছ থেকে দূরে দূরে থেকো। উনার উপরে কিন্তু অভিশাপ রয়েছে।মন্ত্রীর মৃত্যুটা কিভাবে হয়েছে জানো তো? তাকে নাকি কুকুরের একটা আত্মা ধরেছিল। প্রায়ই প্রাসাদের পাশের জঙ্গলটা থেকে আওয়াজ আসে। সাবধানে থেকো।
হ্যাঁ তা শুনেছি ধন্যবাদ।আমি বেশিদিন থাকবো না। স্যারের কিছু কাগজপত্র নিতে হবে তো তাই আমাকে সাথে নিয়ে এসেছেন। চা খাবেন নাকি?
না আমার স্কুলে কাজ আছে।
আপনি শিক্ষক? শিক্ষক নয় কিন্তু শিক্ষক একসময় ছিলাম। পাশের প্রাইমারি স্কুলটায় যাব। যাবে নাকি আমার সাথে?
সাথে নিয়ে গেলে খুশি হব আমিও গ্রামটা গিয়ে দেখার জন্যই বের হয়েছিলাম।
দুজন রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটতে রাখলাম। মন্ত্রীরা খুব বড় লোক সেই হিসেবে গ্রামের মানুষদের তেমন কোন উপকার করেননি। কিন্তু তাদের বাবা ও দাদা মানুষদের খুব সাহায্য করতেন এই যে প্রাইমারি স্কুলটায় যাব সেটা মন্ত্রীর দাদার নামে।
আপনার নামটা তো জানা হলো না।
হ্যাঁ হ্যাঁ। কথার ছলে বলতে ভুলেই গেছি। আমি সাজ্জাদ হোসেন। আগে হাই স্কুল টিচার ছিলাম। বউ মারা যাওয়া একাকিত্বের কারণে চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছিলাম। এখন যে স্কুলটায় যাচ্ছি সেখানে আমার বন্ধু চাকরি করে। হেডমাস্টার তার সাথেই কিছুটা সময় কাটাতে যাচ্ছি।
ও আচ্ছা আমি ইমন। আপনাকে একটা প্রশ্ন করি যদি কিছু না মনে করেন।
জি অবশ্যই বল।
এই যে মন্ত্রীর মৃত্যুতে সবচেয়ে বেশি লাভবান কে হতে পারে? আর এটা কি কোন স্বাভাবিক মৃত্যু নাকি খুন নাকি কোন প্রেতাত্তা থাকে মেরেছে।
তা আমি জানিনা ডাক্তারেরা ময়না তদন্ত করেছেন। খবরের কাগজে শুনেছি হার্ট অ্যাটাক। কিন্তু যেদিন তার মৃত্যু হয় সেদিন জঙ্গলের থেকে কুকুরের আওয়াজ শুনেছি। গ্রামের কৃষকেরাও এই কুকুরটাকে নাকি দেখেছে। সাইজও অনেক বড়।তাই গ্রামের মানুষেরা ধারণা করছেন যে কুকুরটাই তাকে মেরেছে। আর তাদের উপর ব্রাহ্মণদেরও একটা অভিশাপ ছিল না সেটার কারনে।
আপনিও দেখছি কুসংস্কার বিশ্বাস করেন। শিক্ষক মানুষ হয়েও কুসংস্কারকে কেউ পাত্তা দেয় নাকি।
তুমি গর্জন শোনোনি তাই এটা বিশ্বাস করছো না। কয়েকদিন এখানে থাকো, ঠিক টের পাবে।
এর পরে তার সাথে তার হেডমাস্টার বন্ধুর রুমে গেলাম । গ্রামের অনেক কিছুর তথ্য তার থেকে পাওয়া গেলো । শেষে ভদ্রলোক আমাকে তার বাড়িতে দাওয়াত দিয়ে বসলেন । আমি বিভিন্ন কাজের ছুতো দিলাম । তার বাসায় আর যাওয়া হলো না। বিকেলে গ্রাম ঘুরে , প্রাসাদের দিকে যাচ্ছিলাম । পথের মাঝখানে একটা আর্তনাদ শুনতে পেলাম । সেটা কোনো মানুষের আর্তনাদ নয় । সেটা শিয়াল কিংবা কুকুরের একটা আর্তনাদ । জঙ্গল থেকে আসছিল আর আমি সেটা স্পষ্ট শুনতে পারছিলাম । গ্রামের দিকে শিয়ালের ডাক একটা স্বাভাবিক ব্যাপার আর গ্রামের একপাশে যদি এমন একটা ভয়ংকর জঙ্গল থাকে তাহলে তো কথাই নেই । এখানে শিয়াল কুকুরের আস্তানা থাকবে একটা একটা সাধারণ ব্যাপার। তবুও মনের মধ্যে কেন যেন একটা ধাক্কা দিল। তাড়াতাড়ি প্রাসাদের দিকে ছুট দিলাম । যেটা ভেবেছিলাম সেটা হয়নি কিন্তু অনুমান কাছাকাছি পৌঁছেছে। কম বয়সি ছেলেটি আমাকে জানালো তার স্যার অসুস্থ্য। সেই ডাকটা শোনার পর থেকেই নাকি তার শরীর খারাপ করছে ।
আচ্ছা । সারাদিন তিনি কি করছিলেন?
স্যার তো সারাদিন ওনার স্টাডি তে বসে কাজ করছিলেন । আর সন্ধ্যাবেলায় ডাকটা শোনার পর ই ওনার এই অবস্থা।
আচ্ছা। প্রেশার বেড়ে গেছে । বুঝতে পেরেছি।
স্যার আপনাকে একটা কথা বলি । আপনারা এখন থেকে চলে যান । বড় বাবুর সাথে যা হয়েছে । আমার তো মনে হচ্ছে অভিশাপ আবার ফিরে এসেছে।
আচ্ছা তোমার সাথে কিছু কথা আছে । তাকে বাসার এক কোণে নিয়ে গেলাম । তোমার বড় বাবু এখানে যে আসবে সেটা প্রথম তোমাকে কে জানিয়েছিল?
ওনার পি এ।
আর ওনার মারা যাওয়ার পরে বাসা থেকে কিছু মিসিং এমনটা মনে হয়েছে ?
না তো । তেমন ভাবে তো আমি লক্ষ্য করিনি ।
আচ্ছা তুমি যাও ।
কেসটা কিছুটা আলোর মুখ দেখেছে। ওনাকে মারার মোটিভ আছে অনেক । এর পরে আমি মানসিক ভাবে আশ্বস্থ করতে ইফতেখার সাহেবের রুমে গেলাম। রুমে প্রবেশ করতেই ওনার চেহারায় একটা স্বস্তির ছাপ দেখতে পারলাম । চিন্তা করবেন না আমি আছি। একা বের হবেন না । এটা আপনার হার্টের পক্ষে ক্ষতিকারক। আমি কথা দিচ্ছি ৩ দিনের মধ্যে এই কুকুর রহস্যের একটা সুরাহা করবো।
আপনার কথায় যেন আবার প্রাণ ফিরে পেলাম ।
বুঝতে বাকি রইলো না আমার কথায় তিনি আশ্বস্থ হয়ছেন।
পরের দিন সকাল থেকে দুপুর জঙ্গল এ কাটালাম। ভালো করে যতটুকু সম্ভব সবটুকু অবজার্ভ করলাম । কিছু খুঁজে না পাওয়ায় একরকম রাগ করেই বের হয়ে যাব নিচে একটা পায়ের ছাপ খেয়াল করলাম । ডান পায়ের বুট জুতার ছাপ । যিনি এই রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করেছেন তিনি ভালোভাবেই জানেন কোথা দিয়ে হাটলে পায়ের ছাপ পরবে না । তাই তিনি বেছে বেছে ঘাসের উপর হেটে গিয়েছেন । বুনো ঘাসের উপর হাটলে পায়ের ছাপ পরে না বললেই চলে । কিন্তু তিনি যে ভুল একটা কাজ করে ফেলেছেন সেটা নিজেও বুঝতে পারেন নি । তাড়াতাড়ি স্মার্ট ফোন পকেট থেকে বের করলাম । আর পায়ের ছাপের কয়েকটা ছবি তুলে ফেললাম । জঙ্গল থেকে বের হয়ে সাজ্জাদ সাহেবের সাথে দেখা । তিনি আমাকে দেখে নিজেকে সামাল দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন ,
এ ইমন নাকি? জঙ্গলের দিকে কি করছো ।
তেমন কিছুই না গাছপালা দেখছিলাম আরকি।
তোমার ও গাছ পালায় সখ আছে দেখছি ।
হ্যা আপনার মত না হলেও হালকা পাতলা সখ আছে । গ্রামে এসেছি আর গাছপালা দেখবো না ।
তুমি কি করে বুঝলে যে আমার গাছপালার সখ আছে?
খুব সহজ । আপনার ডান পায়ের পাজামার কোনে একটু গোবর লেগে আছে আর হাতে মনে হয় নিড়ানি ছিলো অনেক্ষন মাটি আলগা করার কারনে ডান হাতের তালু কিছুটা লাল হয়ে আছে । গোবরের ছাপ না থাকলে ভাবতাম দা দিয়ে গাছপালা সাফ করছিলেন। যেহেতু সারা সকাল মাটি আলগা করছিলেন ভবিষ্যতবাণী করা যেতেই পারে আপনি বিকালে কিছু চারা রোপন করবেন ।
এক্সিলেন্ট তুমি এমনভাবে বললে যেনো তুমি আমার সাথেই ছিলে । তোমার দৃষ্টিশক্তির তুলনা হয়না ।
তিনি আমার প্রশংসা করছিলেন এর মাঝেই পেছনের ঝোপ থেকে কি যেন একটা সরে গেলো ।
দেখলে কি যেনো ছিল ওখানে।
কই?
তুমি আওয়াজটাও শুনলে না?
কই আমি কিছুই শুনি নি ।
সত্য কথা এটা যে আমি সব শুনেছি এবং দেখেছি কিন্তু তাকে বুঝতে দেই নি ।
তুমি বাসায় চলে যাও এখানে থেকে নিজের বিপদ ডেকে এনো না ।
আমিও আর কিছু বললাম না । সিগারেটা ধরিয়ে প্রাসাদের দিকে চলে আসলাম । বাসায় এসে দেখলাম ইফতেখার সাহেব আমার জন্য দুপুরের খাবার সাজিয়ে বসে আছেন।
এইত আপনি আপনাকে তো পুরো গ্রাম খুজলাম। আপনার দেখি কোনো হদিস নেই। কোথায় ছিলেন সারাদিন?
সে ছিলাম আমার এক কাজ ছিলো আপনাদের গ্রামে। হাহা সেটাই কম্পলিট করলাম।
খেতে খেতে অনেক খুটিনাটি ব্যাপার নিয়ে আলাপ করলাম।
আপনার কাছ থেকে কিছু জানার ছিল।
হ্যা বলুন।
আপনার ভাই এর বডিগার্ড এর ঠিকানাটা আমাকে দিয়ে রাখবেন আজকেই। আমার একটা দরকার আছে ওনার সাথে।
আচ্ছা আমি আপনাকে দিয়ে রাখছি।
রাতে কিছুতেই চোখের পাতা এক করতে পারছিলাম না। ১ প্যাকেট সিগারেট কয়েক ঘন্টায় শেষ করে ফেললাম। আমার রুম এই নজরুল সাহেবের মৃত্যু হয়েছিল । বারান্দায় দাঁড়িয়ে খেয়াল করলাম জঙ্গলের একটা সুন্দর দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।
রাতা তিনটা বাজে ঝোপের দিকে একটু নাড়াচাড়া খেয়াল করলাম। এটা যে কোনো কুকুর শিয়ালের ঝোপ থেকে বের হওয়ার আওয়াজ এমন নয়। ছায়াটা অনেক বড়। আমি জলদি আমার পকেটের থেকে ছোট লাইটটা বের করলাম। কিছু না ভেবেই ২ তলা থেলে লাফ দিলাম। কোমরে একটু ব্যাথা পেয়েছি। কিন্তু ছায়াটাকে হারালে চলবে না। পেছন পেছন খুব দ্রুত দৌড়ে চলছিলাম । শেষে লাইট টা মারতেই লক্ষ করলাম এটা কোনো জন্তুর ছায়া না মানুষের ছায়া। শেষে কোমড়ের ব্যাথা সহ্য না করতে পেরে জায়গায় পরে ছিলাম। সকালে দেখলাম আমাকে কয়েকজন ধরে প্রাসাদের কোনে রেখেছে । চোখে মুখে পানি ছেটাচ্ছে। পানির ঝাপটায় আমার হুশ হয়। আমার জ্ঞান ফিরতেই দেখলাম ইফতেখার সাহেব।
কি হলো আপনি দেখি জঙ্গলের মাঝে গিয়ে পড়ে ছিলেন। আপনি যে বাড়ি থেকে বের হলেন কাউকে তো জানিয়ে বের হতে পারতেন ।
নাহ্। আমি বারান্দা থেকে পড়ে গিয়েছিলাম । এর পরে একটু জঙ্গলের দিকে গেলাম যদি সেই প্রাণীর দেখা পাই।
আপনিও একটা জিনিস। কোথায় ব্যাথা পেয়েছে। এই রনি একজন ডাক্তার নিয়ে আয়।
সেদিন আমার তদন্ত কিছুই আগালো না। কোথায় কথা দিয়েছিলাম ৪৮ ঘণ্টা এখন দেখছি আপনার শরীরের যা অবস্থা আমি সোজা হয়ে দাড়াতে পারবো কি না তাই নিয়ে সন্দিহান।
______
এভাবে আরো তিনটি দিন চলে গেল, প্রায় এক সপ্তাহ নিয়ে বসে সমীকরণ মেলানোর এক অপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি। আজকে শরীরটা কিছুটা ভালো লাগছে । ঠিকঠাক লাগবে সকালবেলায় রওনা হব ঢাকার উদ্দেশ্যে কিছু জরুরী কাজ বাকি আছে। সফল হলে অন্তত ধরে নেওয়া যাবে আমার অবজারভেশন সম্পূর্ণ সঠিক। কথা না বেরিয়ে সকালবেলা নাস্তাটা নার্সারি মাইক্রো করে ঢাকা চলে গেলাম। খুঁজে বের করলাম এমপি সাহেবের কাছের বডিগার্ড কে। এবার হয়তো সকল বিষয়ের উত্তর তিনি দিতে পারবেন।
অনেক কষ্টে উত্তরার দিকের এক কোণে বডিগার্ডের যে ঠিকানাটা দেওয়া ছিল সে বাসার নিচে গিয়ে দাঁড়ালাম। নিজেকে ধারাতে একটা বিশাল আকারের লোক আমার দিকে কেমন দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল। তাকে উদ্দেশ্য করে বলে ফেললাম আপনি তো এমপি মহোদয়ের দেহরক্ষী ছিলেন তাই না মিস্টার সামাদ।
লোকটা একটু অবাক হয়ে উত্তর দিল হ্যা।
আমাকে ইফতেখার সাহেব পাঠিয়েছেন আপনার কাছে কিছু ব্যাপারে কথা বলার ছিল।
আচ্ছা ভেতরে চলুন।
তিন তালার ফ্লাটে উঠে বাম দিককার রুমে ঢুকলাম। বাসায় কেউ থাকেন না বললেই চলে। ব্যাচেলর রুম মনে হচ্ছে তিনি একাই থাকেন। আমার দিকে একটা চেয়ার এগিয়ে দিয়ে বসতে বললেন।
জি স্যার বলুন কি জানতে চান?
না তিনি কিছুটা ছিলেন কিন্তুজানার মতো তেমন কিছুই নাই আপনি যেহেতু এমপি সাহেবের খুব কাছের মানুষ ছিলেন তাই ছোটখাটো কিছু তথ্য যদি জানাতে পারতেন তাহলে একটু কেস টা নিয়ে এগিয়ে যেতে পারতাম।
আমি যতটুকু জানি তার সম্পূর্ণ আপনাকে জানানোর চেষ্টা করব।
আপনি কি জানেন আপনার মালিক কিছুদিন ধরেই আধ্যাত্মিক কোন প্রেত ভূত কুকুর এগুলো নিয়ে খুব চিন্তিত ছিলেন।
তা তিনি কিছুটা ছিলেন কিন্তু এর থেকেও বড় একটা সমস্যা ছিল ।
তাহলে চিঠিটা কবে এসেছিল কে পাঠিয়েছিল কিছু জানেন?
আমি তো সেসব কিছু জানিনা হঠাৎ দেখলাম স্যারের কাছে একটা চিঠি এলো স্যার সবাইকে রুম থেকে বের করে দিলেন আমি পাশে ছিলাম। চিঠিটা খুলে পড়তেই যেন স্যারের চোখে মুখে একটা আতঙ্ক দেখা দিয়েছিল।
আপনার স্যারকে ব্ল্যাকমেইল করছিল?
তাই হবে স্যারের গ্রামের বাড়িতে কি জমি জমা দখল করে দুর্নীতি করেছিল এতটুকু জানি ফাঁস করার চেষ্টা করছিল কিছু লোক।
তোমার স্যার যে কিছু কিছু জায়গায় দুর্নীতি করেছে সেটা সকলেই জানে। এমন কিছু নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করছিল যেটা আমাদের জানার বাইরে?
স্যার, ব্যাপারটা কি নিয়ে সেটা আমি জানি না। তবে এইটুক নিশ্চিত ওনাকে কেউ ব্ল্যাকমেইল করো।তো । আমার সাথে এসব কথা টুকিটাকি শেয়ার করতো উনি সেই সুবাদেই আমি তা জানতে পেরেছি ।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যাবাদ । আমার যা কিছু জানার প্রয়োজন ছিল সেটা মনে হয় আমার জানা হয়ে গেছে ।
ওনার বাসা থেকে বেরিয়ে আমার মনের মধ্যে চলতে থাকা সমীকরণ মেলানোর চেষ্টা করছিলাম। কিছুতেই যেন দুই আর দুই চার করতে পারছিলাম না। একটি ইটের দেয়ালের মাঝে চার পাচটা ইট না থাকলে দেয়ালটা দেখতে যেমন হয় আমার কাছে এই কেসটা ঠিক তেমন মনে হচ্ছিল । কিছু বুঝে না উঠতেই মনে হলো কেউ মনে হয় আমাকে ফলো করছে । এটা আমার মনের ভুল ও হতে পারে । আগে একবার একটা ইনভেস্টিগেশনে এই সমস্যায় পড়তে হয়েছিলো , কিন্তু যত যাই হোক এ নিয়ে সাবধান থাকতে হবে ।
বাড়ি থেকে বের হয়ে, খুব দ্রুত রাস্তার পাশে থাকা একটা চায়ের দোকানে ঘপটি মারলাম। এতে আমার পেছনে পেছিনে কেউ হন্যি হয়ে এলে খুব সহজেই বুঝতে পারবো। দোকানে বসে দুইটা সিগারেট আর চা শেষ করলাম কিন্তু আমাকে ফলো করার মত কাউকে খুজে পেলাম না। এটা হতে পারে আমার মনের ভুল। আমি হয়ত মস্তিস্ককে একটু বেশি ঘটাচ্ছি।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন